নিজস্ব প্রতিবেদক:
মুখে ইয়াবা সেবনের জন্য সিগারেট আকৃতির সাদা নল। অন্যদিকে ফয়েল পেপারের সাহায্যে উপরের দিক থেকে লাইটারে আগুন ধরিয়ে নিচের দিকে টানছেন। তারপর সিগারেট আকৃতির সাদা নলের মাধ্যমে ইয়াবা গ্রহণ করছেন। যিনি ইয়াবা সেবন করছেন তিনি সাধারণ কোনো মাদকসেবী নন। তিনি গাজীপুর মহানগরের ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। তার নাম রাজিব মিয়া। সম্প্রতি তার ইয়াবা সেবনের ৪৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও এসেছে গণমাধ্যমের কাছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, সাদাশার্ট পড়া ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব মিয়া কোনো এক কক্ষে বসে হাতে একটি সরু কাগজের পাইপের সাহায্যে নেশাজাতীয় দ্রব্য ইয়াবা সেবন করছেন। তার অপর দিক থেকে রাজিব মিয়ার ইয়াবা সেবনের ভিডিও ধারণ করছেন। তবে ভিডিও ধারণ করা ব্যক্তির নাম পরিচয় জানা যায়নি।
সরজমিনে গিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক দোকানি জানান, রাজিব মিয়া দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা সেবনের সঙ্গে যুক্ত। তার চলাফেরা অন্যরকম। তাকে দেখলেই বোঝা যায়, তিনি একজন নিয়মিত মাদকসেবী। তবে কেন যে তার বিরুদ্ধে এতদিনে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি, সেটা দলের নেতারাই ভালো বলতে পারবেন।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, রাজিব মিয়ার ইয়াবা সেবনের ব্যাপারে এলাকার অনেকেই জানে, তিনি মাদক সেবন করে থাকেন। দয়াকরে আমাদের নাম যেন প্রকাশ না করা হয়। তাহলে আমাদের এখানে বসবাস করতে সমস্যা হবে। তাছাড়া তার চলাফেরাও খুব বেশি স্বাভাবিক নয়। একজন মাদকসেবীর আচার-আচরণ কেমন হয়, তা তো আপনি জানেন।
জানতে চাইলে কোনাবাড়ী থানা যুবদলের সদস্য সচিব আজিজুল ইসলাম বলেন, আমাদের আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের কড়া নির্দেশ যুবদলে কোন ধরণের সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদক সেবনকারীর স্থান নেই। যারা মাদক সেবনের সাথে জড়িত তাদের পক্ষে যুবদল কথনোই সাপোর্ট করবে না। তারা দেশ ও সমাজের শত্রু।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোনাবাড়ি থানা যুবদলের এক নেতা বলেন, ওয়ার্ড পর্যায়ের একজন নেতার মাদক সেবনের এ ধরনের ভিডিও যদি প্রকাশ্যে আসে তাহলে দলের সম্মান কোথায় যায়। তার মত নেতাকে দিয়ে দলের কী উপকার হতে পারে।
ইয়াবা সেবনের বিষয়টি স্বীকার করে রাজিব মিয়া জানান, ভিডিওটি কয়েকমাস আগের। ওই সময় আমার পাশে থাকা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ অন্তরালে এ ভিডিওটি করেছেন। ঘটনার কয়েকদিন পর অর্থাৎ ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কর্মকা-ে জড়িত থাকার দায়ে আমাকে দল থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়।
আমি স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে নোটিশের জবাব দিয়েছি। এখন আবার নতুন করে আমার বিরুদ্ধে কেউ ষড়যন্ত্র করছে। আমার প্রতিপক্ষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সংবাদ মাধ্যমে ভিডিওটি ছড়াচ্ছে। এতে তার মানসম্মানের যথেষ্ট হানি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পূর্বের ভিডিওটি বর্তমানে ছড়িয়ে আমার ব্যক্তিগত জীবন হুমকির মুখে ফেলতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাকে হয়রানি ও বিপদগ্রস্ত করতে এমনটি করা হচ্ছে।
Leave a Reply