নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিনা অনুমতিতে দাপ্তরিক নথিপত্র আগুনে পোড়ানোর অভিযোগ উঠেছে কালীগঞ্জ পৌর ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক এরশাদ হোসেনের বিরুদ্ধে। এরপর আগুনে পোড়ানো ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে। ভিডিওতে দেখা যায়, কালীগঞ্জ পৌর ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক এরশাদ হোসেন অফিস প্রাঙ্গনে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র আগুনে পোড়াচ্ছেন।
বিষয়টি জানতে পেরে গত ৩মার্চ কালীগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) নূরী তাসমিন উর্মি’র সাক্ষরিত কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ প্রদান করেন। নোটিশে বিনা অনুমতিতে দাপ্তরিক নথিপত্র আগুনে পোড়ানোর অভিযোগে কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জানতে চেয়ে তিন দিনের মধ্যে জাবাব দিতে বলা হয়। তবে শোকজ নোটিশের বিস্তারিত জবাব এখনো পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, রেভিনিউ স্যারের সাথে কথা বলেন, তার (এরশাদের) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক স্যার ও এডিসি রেভিনিউ স্যারকে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে এরশাদ হোসেনের মুঠোফোনে একাধিবার ফোন করলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কালীগঞ্জ ৫ আসনের সাবেক এমপি ও একাধিক হত্যা মামলার আসামী মেহের আফরোজ চুমকির আশীর্বাদপুষ্ট চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হয়েও প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার হিসেবে আধিপত্য বিস্তার করে কালীগঞ্জ পৌর ভূমি অফিসকে কব্জায় রাখতেন এরশাদ। তার ভয়ে তটস্থ থাকতেন অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, এখতিয়ার বহির্ভূত কাজ করাসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এরশাদ। সখ্যতা গড়ে উঠে জমির জালজালিয়াত চক্রের সঙ্গেও। নামজারি ও মিস কেসের নামে এরশাদ ঘুষ বাণিজ্যে মেতে থাকতেন। নামজারি-খারিজ করতে গিয়ে সেবা গ্রহীতারা নানা হয়রানির শিকার হয়েছেন অনেকেই।
একই সাথে সাবেক এমপির আত্মীয় পরিচয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে ছিল নিয়মিত ওঠাবসা। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হয়েও নিজের এলাকায় দাঁপিয়ে বেড়াতেন আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী পরিচয়ে। আওয়ামীলীগের গুণকিত্তন গেয়ে বিএনপির তৃনমূল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দিয়েছেন একের পর এক হয়রানীমূলক মামলা। জুলাই গণঅভুথ্যানে ছাত্র আন্দোলন প্রতিহত করতে অন্যতম ভূমিকায় ছিলেন এরশাদ।
তবে ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর খোলস পাল্টে নিজেকে এবার বিএনপির ব্যানারে রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার সুযোগ খুঁজছে আওয়ামী লীগের দোসর কালীগঞ্জ পৌর ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক এরশাদ।
চতুর্থ শ্রেণির একজন কর্মচারী হয়েও বালীগাঁওতে বিশাল অট্টালিকা, পূর্বাচলে প্লট, বিভিন্ন জায়গায় কোটি টাকার সম্পত্তি গড়ে তোলার গুঞ্জন। যা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদকের) অধিকতর তদন্তে বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল। আরও বিস্তারিত আসছে..
Leave a Reply