স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানী মহাখালী থেকে ছেড়ে যাওয়া সম্রাট পরিবহন গাজীপুর কাপাসিয়া হয়ে নরসিংদী মনোহরদী উপজেলার চালাকচর এলাকায় যায়। মহাখালী থেকে মনোহরদী রোডে সম্রাট পরিবহনের ৬৫/৭০ টি গাড়ি যাত্রী নিয়ে চলাচল করলেও একটি গাড়ির নেই কোনরকম অনুমতি (রোড পারমিট)।
জানা যায়, জুলাই বিপ্লবের পর গত ৫ আগষ্ট স্বৈরাচারী হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর সরকারের কোনরকম অনুমতি ছাড়াই স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের ম্যানেজ করে ঢাকা মহাখালী থেকে গাজীপুরের কাপাসিয়া হয়ে কিশোরগঞ্জের ভাগলপুর পর্যন্ত নতুন রাস্তা চালু করে এই সম্রাট পরিবহন কতৃপক্ষ।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, এইসব গাড়ির এই রাস্তায় যাত্রী নিয়ে চলাচলের কোন অনুমতি পত্র ( রোড পারমিট ) নাই। গাড়িগুলো মূলত ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের ভালুকা সহ ময়মনসিংহ এর বিভিন্ন রোডে চলাচলের জন্য অনুমোদিত।
এমতাবস্থায় মহাখালী থেকে শুরু করে কাপাসিয়া হয়ে চালাকচর পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও প্রশাসন-ট্রাফিক পুলিশের সাথে আঁতাত করে অবৈধ ভাবে এই পরিবহন ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন সম্রাট পরিবহনের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আবুল বাসার।
আবুল বাসার মাস্টার ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে গাজীপুর জেলা আওমীলীগের সহ-সভাপতি ও কাপাসিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আমানত হোসেন খান এবং উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সাবেক (ইউপি) চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন প্রদান এর সাথে আঁতাত করে সরাসরি নানান অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যায়।
গত ৪ ই আগস্ট ২০২৪ কাপাসিয়া নতুন বাস স্ট্যান্ড এলাকায় আওয়ামী লীগের হয়ে ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলায় সরাসরি অংশগ্রহণ করেন এই আবুল বাশার মাস্টার। পরবর্তিতে ৫ আগষ্ট স্বৈরাচারী হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর সে নতুন করে ধীরে ধীরে বিএনপির লোকদের সাথে চলাচল শুরু করে। বর্তমানে সে কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপি’র এক নেতার ছত্রছায়ায় নিজেই বনে যান বিএনপির প্রভাবশালী নেতা।
নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কাপাসিয়া পরিবহন খাতের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী বলেন, আবুল বাশার মাস্টার ও তার কিছু সহযোগী মিলে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে সম্রাট পরিবহন পরিচালনা করছেন। এতে পরিবহন খাতে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। রাষ্ট্র হারাচ্ছে রাজস্ব।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, এই সম্রাট পরিবহনের প্রায় প্রত্যেকটি গাড়ি অবৈধ। এখানে যেমন গাড়ির বৈধ রোড পারমিট নাই তেমনি গাড়ির বৈধ কাগজ, যেমন ফিটনেস, টেক্স টোকেন সহ অন্যান্য কাগজপত্র কিছুই নাই।
সম্রাট পরিবহনের এমডি আবুল বাশার টেলিফোনে অবৈধ গাড়ির কথা স্বীকার করে এই প্রতিবেদককে জানান, কিছু গাড়ির রোড পারমিট আছে আর কিছু গাড়ির নাই। বর্তমানে রোড পারমিট বন্ধ থাকায় আগের যে গাড়ি গুলোর রোড পারমিট ছিল না সেগুলো এখন আর করা যাচ্ছে না।
গাজীপুর জেলা ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) মো: শাহাবুদ্দিন বলেন, এক রোডের পারমিশন নিয়ে অন্য রোডে চলাচল করার সুযোগ নেই, ফিটনেসবিহীন গাড়ীও চলাচল করার সুযোগ নেই এসবের বিষয়ে আমাদের নিয়মিত অভিযান পরিচালনা হচ্ছে এটি অব্যাহত থাকবে।
Leave a Reply