1. admin@dainikvoreralobd.com : voreralobd :
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
গাজীপুরে বলাৎকারের অভিযোগ এনে সকালে ইমামকে গণপিটুনি, রাতেই কারাগারে মৃত্যু জাল সনদে চাকরি: কাপাসিয়ায় দুই মাদ্রাসা শিক্ষকের এমপিও স্থগিত গাজীপুরে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপন গাজীপুরে রাতের অন্ধকারে মাটি কাটার দায়ে ১০ জনের কারাদণ্ড গণধোলাইয়ের শিকার ইমামের কারাগারে মৃত্যু পহেলা মে শ্রমিক দিবস উপলক্ষে শ্রমিক দলের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয় বুড়িমারী আন্তঃনগর ট্রেন চালুর দাবিতে যাত্রী কল্যাণ পরিষদের সংবাদ সম্মেলন গাজীপুরে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে বড় ভাইয়ের হুমকিতে এলাকাছাড়া ছোট ভাইয়ের সংবাদ সম্মেলন গাজীপুরে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সংবাদকর্মী লাঞ্ছিত পূবাইলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শিশুকে বলাৎকার, ইমাম গ্রেফতার

সেবা প্রার্থীরা সচেতন হলেই ভোগান্তি কমানো সম্ভব: সদর এসিল্যান্ড

  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৬৭ বার পাঠ করা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নামজারি আবেদনের ক্ষেত্রে ভূমি সেবা প্রার্থীরা একটু সচেতন হলেই ভোগান্তি আরও কমানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন গাজীপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মঈন খান এলিস। তিনি বলেন, আবেদনকারী নিজের নাম্বার না দিয়ে অধিকাংশ সময় মধ্যস্থতাকারীর নাম্বার দিয়ে থাকেন। যার কারণে আবেদনকারী জানতে পারে না। নামজারি আবেদনে আবেদনকারী নিজের ফোন নাম্বার না দিয়ে দোকানির ফোন নাম্বার দিয়ে নামজারি আবেদন করাতে মূলত এই সমস্যাগুলো দাড়িয়েছে। সে ক্ষেত্রে সেবাপ্রার্থীদের আরো সচতেন হতে হবে।

সোমবার (৭ এপ্রিল) সরজমিনে গিয়ে সেবা প্রার্থীদের ভোগান্তির বিষয়ে কথা হয় সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মঈন খান এলিসের সাথে। তিনি জানান, আমার এখানে যতগুলো নথি রয়েছে সব চলতি সময়ের। আবেদনে সমস্যা থাকার কারণে পূর্বের নামজারিগুলো নিষ্পত্তি করতে গিয়ে সময় বেড়ে যায়। যার জন্য আমরা পুরাতন আবদেনের কাগজপত্র অনলাইনে খুঁজে পাই না।

বর্তমানে আমার এখানে ২৭০০ নথি রয়েছে। ক্লিক করলে দোকানদার বলে যে আপলোড করেছি। কিন্তু আমার এখানে পাওয়া যাচ্ছে না। এখন সরকার যে সিস্টেম চালু করেছে তাতে অনলাইনে সকল কাগজপত্র থাকতে হবে। মূল নথি যেকোন সময় দূর্র্ঘটনাকবলিত কারণে হারিয়ে যেতে পারে।

পরবর্তীতে যদি কেউ এসে চ্যালেঞ্জ করে এটা কিভাবে দিলেন। তারপর অনলাইনে যদি কাগজপত্র না থাকে তাহলে প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হবে। দোকানদার যে ভুলটা করে ফাইল আপলোড হওয়ার আগেই সে সাবমিট বাটনে ক্লিক করে। যার ফলে সে দেখতে পায় ফাইল আপলোড হয়েছে। কিন্তু আমার এখানে আসেনা। কারণ সে সঠিক ভাবে আপলোডই করে নাই। সে জানেনা আপলোড করতেও সময় লাগে।

তিনি আরও বলেন, মানুষ এখনো সচেতন না। আগে তাদের নিজেদের সচেতন হতে হবে। অনেক সেবা গ্রহীতারা আছে বহিরাগতদের সুপারিশ করে বলে আমার কাজটা করে দাও কিছু টাকা দিবো। টাকা দিয়ে কাজ করার ধারণা থেকে তাদের বের হয়ে আসতে হবে।

আবেদনকারীদের উদ্দ্যেশ্যে করে মোঃ মঈন খান এলিস বলেন, সেবা প্রার্থীরা আবেদন করার সময় যাতে খেয়াল রাখে দোকানদার সঠিকভাবে তার যাবতীয় কাগজপত্র আপলোড দিয়েছে কিনা তা যাচাই করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করে।

সেবা প্রার্থীদের কোন অভিযোগ রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেবা প্রার্থীদের কোন অভিযোগ নেই। আমার দরজা সবার জন্য খোলা, যে কেউ আসতে পারে। তবে নামজারি আবেদনকারীদের মধ্যে যারা অসুস্থ্য তারা সরাসরি আমার কাছে আসে। কাগজপত্রের কোন ত্রুটি না থাকলে যত দ্রুত সম্ভব গুরুত্ব দিয়ে তাদের নামজারি আবেদন সম্পন্ন করে দেই। এছাড়া আর অন্যান্য কোন অভিযোগ নেই বা শুনিও না।

যোগদানের পর থেকে কতগুলো আবেদন জমা রয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি যোগদানের পর ৪৫০০ নথি ছিল। এছাড়াও প্রতিমাসে গড়ে ৩হাজার আবেদন জমা পড়ছে। গত তিন মাসে ৯হাজার নামজারি আবেদন জমা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৩ হাজার ৫শত আবেদন জমা পড়েছে। তাছাড়া বর্তমানে প্রায় ৫ হাজারের মত আবেদন জমা রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ১৫০ টা নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, আমার কাছে অনেকগুলো আবেদন রয়েছে যার মধ্যে দেখা যায় আবেদনকারী তার কাজগপত্রগুলো সঠিকভাবে সাবমিট করে নাই। যেমন দলিলের একটি অথবা দুইটি পাতা দেয়। মাঝখানে তফসিলের পাতা দেয়না। যেটা মূলপাতা সেটাই দেয়নি। যার কারণে কিছু নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি হয়নি। তাছাড়া গত বছরের নভেম্বর মাসের ২৬ তারিখ থেকে সার্ভার জটিলতার কারণে চলতি জানুয়ারি মাস পর্যন্ত নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি করতে সমস্যা হয়েছিল। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নামজারি আবেদনের নতুন একটি ভার্সনে প্রবেশ করবে। তাতে করে নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি করতে আরও সহজ হবে বলে জানান তিনি।

বাকি নামজারি আবেদন গুলো কয়দিনের মধ্যে শেষ হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাজীপুরে নামজারি আবেদনের পরিমাণ বেশি হওয়ায় সার্ভারের উপর চাপ বেশি পরে। এতে করে সার্ভারের গতি স্লো হয়ে যায়। অনেকসময় একবারের জায়গায় তিনবার ক্লিক করলে কাজ হয়।

ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এখন আগের মত ভোগান্তি নেই। সেবা প্রার্থীরা আসার সাথে সাথে সার্ভিস পেয়ে গেলে আর ভোগান্তি থাকে না। নামজারি আবেদনকারীদের সাধারনত ঘুরাই না। কাগজপত্র ঠিক থাকলে ‘হ’ ঠিকঠাক না থাকলে সরাসরি ‘না’ বলে দেই। এ কারণে অফিসের বাইরে ভিড় কম।

নামজারি আবদনের শুনানীর পর আবেদন বাতিল হলে আবেদনকারীর পরবর্তী কি করণীয় জানতে চাইলে তিনি জানান, অনলাইনে আগে রিভিও সিস্টেম ছিল, সেটা এখন নেই। আমরা মন্ত্রনালয়ে কথা বলেছি, তারা জানিয়েছে নতুন ভার্সনে রিভিও চালু করবে। চালু হলেই সেবা প্রার্থীরা রিভিও করতে পারবে।

তিনি আরও জানান, গাজীপুর জেলা প্রশাসক স্যারের দিক নির্দেশনায় আমাদের অফিসে আসা সকলের জন্য জনবান্ধব ভূমিসেবা নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। একজন মানুষও যাতে ভোগান্তির স্বীকার না হয় সেজন্য আমরা সর্বদা তৎপর রয়েছি। তবে আইনগত কারণে বিভিন্ন সময় সকল মানুষকে সকল সেবা প্রদান করা সম্ভব হয় না। তারপরও আমরা সবসময় চেষ্টা করি সর্বোচ্চ সেবা দিতে।

খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, ভূমি অফিস মানে ভোগান্তি, তবে দীর্ঘদিনের এই ভোগান্তির ধারণা পাল্টে দিয়েছেন গাজীপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মঈন খান এলিস। ভূমি সহকারী কর্মকর্তার সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করে ভোগান্তি ছাড়াই উপজেলাবাসী এখন সব ধরনের ভূমি বিষয়ক সেবা পাচ্ছেন। এরআগে এই কর্মকর্তা নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলায় এসিল্যান্ড হিসেবে দীর্ঘ ৮ মাস সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। গত বছরের শেষ দিকে অর্থাৎ ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর গাজীপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগদান করেন তিনি।

যোগদান করেই সেবা গ্রহিতাদের জন্য ভোগান্তি ছাড়া কাঙ্খিত সুবিধা নিশ্চিত করতে কর্মরত সকলকে দিয়েছেন কঠোর নির্দেশনা। সদর উপজেলা ভূমি অফিস ঘিরে ইউনিয়ন তহশিল অফিসগুলোও জনসাধারণের জন্য খুলে দিয়েছে ভূমি সংক্রান্ত সেবার দরজা। শহর আর গ্রামের মানুষ এখন নিজ ভূমির কাজের কথা অফিসে এসে বলতে পারছেন সরাসরি সহকারী ভূমি কমিশনারকে।

ভূমি অফিসে সর্বসাধারণের যাতায়াত, নামজারী ও জমা খারিজ, মিসকেসসহ জমি সংক্রান্ত যে কোন সমস্যায় সেবাগ্রহিতাদের শেষ আশ্রয়স্থল গাজীপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মঈন খান এলিস। সকল শ্রেনীর মানুষের জন্য তার দরজা সব সময় উম্মুক্ত। তিনি সকলের সমস্যা মনযোগ দিয়ে শুনেন এবং সমাধান করেন।

অফিস সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মঈন খান এলিস যোগদানের পর থেকেই ভূমি কর্মকর্তাদের সঙ্গে জনগণের দূরত্ব কমেছে। জনগণের ভোগান্তি লাগবে সেবার সবকিছু এখন অনলাইনে। তাছাড়া উপজেলা ভূমি অফিসে কোন আর্থিক লেনদেনের সুযোগ নেই। সব স্পট সিসি ক্যামেরায় ধরা। তিনি সার্বক্ষণিক তা পর্যবেক্ষণ করেন। শুধু তাই নয় বর্তমান সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমি ব্যবস্থা শতভাগ অনলাইন আপডেট বাস্তবায়নের লক্ষ্যে, ভূমি সংক্রান্ত কাগজপত্র অনলাইনে আপলোড, বাদি-বিবাদীর সরাসরি শুনানি আর দ্রুততম সময়ের মধ্যে জমির নামজারিসহ নানামুখী সেবায় পাল্টে গেছে গাজীপুর সদর উপজেলা ভূমি অফিসের চিত্র।

সরেজমিনে দেখা যায়, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের ভিতরের বারান্দায় চেয়ারে বসে আছেন সেবা প্রার্থীরা। ভূমি অফিসের প্রবেশদ্বারের বারান্দায় টানানো হয়েছে ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা গ্রহণের গাইডলাইন ও সিটিজেন চার্টারসহ নামজারি, জমি খারিজ ও জমা একত্রীকরণ সংক্রান্ত নিয়মাবলী ও সরকারি খরচের বিবরণ। সোমবার একজন সেবাপ্রার্থী বলেন, এসিল্যান্ড সাহেব অনেক ভালো মানুষ। যদিও আমার কাজটা আজকে হয় নাই। কারণ আমার আবেদনে ভুল ছিল। তিনি সব কথা শুনলেন এবং পরামর্শ দিলেন। খুব ভালো লাগছে।

ঈদ পরবর্তী সোমবার(৭ এপ্রিল) সরজমিনে শুনানী শেষে কয়েকজন সেবাপ্রার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মঈন খান এলিস আসার পর থেকে মানুষের দৌঁড়গোড়ায় ভূমি সেবা পৌঁছে দিতে তিনি কাজ করছেন। যেকোনো মানুষ যেকোনো সময় সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে কথা বলতে পারছেন। উনার বিরুদ্ধে আমাদের কোন অভিযোগ নেই। সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহোদয়ের সেবা ও আচরণে আমরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট। দিন বদলের প্রকৃত উদাহরণ তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি